৬ষ্ঠ অধ্যায় | পাঠ (১-৩) | পরমাণুর গঠন । অষ্টম শ্রেণি বিজ্ঞান | JSC

jsc,science,formationofatom,পরমাণুর গঠন,জেএসসি বিজ্ঞান,অষ্টম শ্রেণি,class 8,eight,solution is simple

এই ভিডিওতে আলোচনা করা হয়েছে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোঃ ১। পরমাণুর ধারনার বিকাশ ও গঠন (কোন বিজ্ঞানী পরমাণু সম্পর্কে কোন মতবাদ দেন) ২। ডাল্টনের পরমাণুবাদ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ৩। রাদারফোর্ডের সৌরমডেল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ৪। রাদারফোর্ডের মডেলের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ৫। বিজ্ঞানী নীলস বোর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। পরমাণু খুব ক্ষুদ্র কণা। তাই এর গঠন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সহজ নয়। তবে বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পরমাণুর গঠন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেছে। পরমাণুতে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যার ভিন্নতার কারণে পরমাণুর ধর্মে পার্থক্য দেখা যায়। পাঠ ১-৩ : পরমাণুর ধারণার বিকাশ ও গঠন তোমরা জেনেছ যে, পদার্থ ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। এ ক্ষুদ্র কণা দুই রকমের- অণু ও পরমাণু। পরমাণু ক্ষুদ্রতম কণা। একের অধিক পরমাণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে অণু গঠন করে। ক্ষুদ্রতম কণার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানী ও দার্শনিকগণ নানা রকম মতবাদ ব্যক্ত করেছেন। গ্রীক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দে সর্বপ্রথম পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা নিয়ে মতবাদ পোষণ করেন। তার মতে সকল পদার্থই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবিভাজ্য (যা আর ভাঙ্গা যায় না) কণা দিয়ে তৈরি। তিনি এই ক্ষুদ্রতম কণার নাম দেন পরমাণুু বা এটম। এটম কথাটি তিনি নিয়েছিলেন গ্রীক শব্দ অ্যাটোমোস ( Atomos ) থেকে যার অর্থ হলো অবিভাজ্য। তার সমসাময়িক সময়ের আরও দুজন দার্শনিক প্লেটো ( Plato ) এবং অ্যারিষ্টটল ( Aristotle ) তার মতবাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। অ্যারিষ্টটলের মতে পদার্থসমূহ নিরবচ্ছিন্ন (Continuous ), একে যতই ভাঙ্গা হোক না কেন, পদার্থের কণাগুলো ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতর হতে থাকবে। ১৮০৩ সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী জন ডাল্টন ( John Dalton ) পরীক্ষালব্ধ তথ্যের উপর ভিত্তি করে পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা সম্পর্কে বলেন- পরমাণুু হলো মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা এবং এটিকে আর ভাঙ্গা যায় না। ডাল্টনের মতবাদ সকলে গ্রহণ করে। ফলে অ্যারিষ্টটলের মতবাদটি পরিত্যক্ত হয়। আসলে পরমাণু অবিভাজ্য নয় বা ক্ষুদ্রতম কণিকাও নয়। পরমাণু বিভাজ্য। এরা আরও ছোট কিছু কণা যেমন ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন দ্বারা গঠিত। ডাল্টনের পরমাণুবাদের এই সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য এরপর আরও অনেকে পরমাণু মডেলের প্রস্তাব করেন। এদের মধ্যে রাদারফোর্ড ও বোরের পরমাণু মডেল গ্রহণযোগ্যতা পায়। একসময় বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড ও তার সহকর্মীরা একটি পরীক্ষা করেন যা পরমাণুর গঠন সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়। পরীক্ষালব্ধ ফল থেকে তিনি বলেন যে, পরমাণুতে ধনাত্মক আধান ও ভর একটি ক্ষুদ্র জায়গায় আবদ্ধ। তিনি এর নাম দেন নিউক্লিয়াস। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন যে, পরমাণুর বেশিরভাগ জায়গা ফাঁকা, আর ঋণাত্মক আধানযুক্ত কণার তেমন কোনো ভর নেই এবং তারা নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। রাদারফোর্ডের মডেল সৌরজগতের মতো। কিন্তু রাদারফোর্ড নির্দিষ্ট কোনো কক্ষপথের কথা বলেননি। বিজ্ঞানী বোর পরবর্তীতে ধারণা দেন যে, ঋণাত্মক আধানযুক্ত কণা কিছু নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, পরমাণু অবিভাজ্য নয়। পরমাণু ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের সমন্বয়ে গঠিত। পরমাণুর কেন্দ্রে রয়েছে নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াসে ধনাত্মক আধানবিশিষ্ট প্রোটন ও আধান নিরপেক্ষ নিউট্রন রয়েছে। পরমাণুর ভরের প্রায় পুরোটাই নিউক্লিয়াসে থাকে। ঋণাত্মক আধানবিশিষ্ট ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে। ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসের মধ্যবর্তী জায়গা ফাঁকা। প্রকৃতপক্ষে পরমাণুর বেশিরভাগ জায়গা ফাঁকা।